মানুষের শারীরিক সুস্থতা অর্জনের জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা খুবই জরুরি। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে ছোটখাটো অসুস্থতা মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই শরীরকে সুস্থ ও বিভিন্ন সংক্রামক রোগ থেকে মুক্ত রাখতে প্রতিটি মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিভিন্ন উপায়ে বাড়ানো যায়। ভালো খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা, শারীরিক পরিশ্রম ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কার্যকরী উপায় কী তা নিয়েই আমাদের আজকের নিবন্ধটি লেখা। যারা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় সম্পর্কে জানতে চান তারা অবশ্যই লেখাটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বেন। চলুন আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় কি কি।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে ছোটখাটো অসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ফলস্বরূপ, মানুষ সামান্য অসুস্থ হলে জটিলতার সম্মুখীন হয়। তাই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মানুষকে স্বাভাবিকভাবে ভালো খাবার খেতে হবে।
এছাড়াও, আমাদের প্রতিদিন কতগুলি কাজ করা উচিত যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। যেহেতু অনাক্রম্যতা বাড়ানো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা অপরিহার্য। জেনে নিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়-
*স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর যে কোন মাদকদ্রব্য বা নেশাজাতীয় দ্রব্য পরিহার করতে হবে। যেমন: বিড়ি, সিগারেট, অ্যালকোহল ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন কারণ এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে।
* সর্বদা অর্গানিক খাবার খান। ভেজাল বা রাসায়নিকভাবে তৈরি বা ব্যবহার করা খাবার থেকে দূরে থাকুন।
* নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। আপনি যদি নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করেন তাহলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হবে।
* ওজন কি সব সময় নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত?
* মানসিক স্বাস্থ্য অপরিহার্য। কেউ মানসিকভাবে অসুস্থ হলে তার শারীরিক সক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যায়।
* উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কোনোভাবে উচ্চ রক্তচাপ তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
* পর্যাপ্ত ঘুমান। সময়মতো ঘুম না হলে এবং ঘুম পূর্ণ না হলে অসুস্থতা তাকে খুব দ্রুত গ্রাস করতে পারে।
* সুস্থ থাকতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কোনো বিকল্প নেই। তাই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অবশ্যই পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন করতে হবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাবার
দুধ বা দুধ-ভিত্তিক খাবারে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শরীরে রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। যেমন: দই, ঘোল, ছোলা, পনির ইত্যাদি এসব খাবারকে চিকিৎসা পরিভাষায় প্রোবায়োটিক বলা হয়।
ভিটামিন সি
শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি থাকা শরীরকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি এ রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বককে ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে। পেঁপে, স্ট্রবেরি, আনারস, লেবু, সবুজ মরিচ ভিটামিন সি এর অন্যতম উৎস।
ভিটামিন এ
ভিটামিন এ হল একটি খনিজ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে সেইসাথে প্রদাহ বিরোধী সিস্টেমকে উন্নত করে। মিষ্টি আলু, সবুজ শাক, লাল শাক এবং পাকা পেঁপে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।
ভিটামিন ই
ভিটামিন ই অন্যতম খনিজ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ই খুবই উপকারী। কাজুবাদাম, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, পালং শাক ইত্যাদি থেকে ভিটামিন ই পাওয়া যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে শারীরিক ব্যায়াম করুন
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শারীরিক পরিশ্রম বা শারীরিক ব্যায়াম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে সচল রাখতে শারীরিক পরিশ্রমের কোনো মিল নেই। শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। শারীরিক ব্যায়ামের ফলে শরীরের কোষে শক্তি উৎপন্ন হয়। তাই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর অন্যতম উপায় হল শারীরিক ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম।
কোন ক্রিয়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়?
শরীরে পুষ্টির অভাব হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। নিয়মিত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রম না করার ফলে শরীর তার শক্তি হারিয়ে ফেলে। ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। জেনে নিন কোন কাজগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায়:
ধূমপান
ধূমপান ধীরে ধীরে শরীরকে দুর্বল করে দেয় এবং শরীর জীবাণুর সাথে লড়াই করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমানোর অন্যতম কারণ ধূমপান।
মদ্যপান বা মদ্যপান
বিভিন্ন অ্যালকোহল পানের ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। নিয়মিত পান করলে অন্ত্রের অভ্যন্তরীণ ক্ষতি হয়।
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে শরীর দুর্বল ও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। শরীরের ক্ষমতা কমে যায় যা অসুস্থতার সাথে লড়াই করা অসম্ভব করে তোলে। একজন মানুষের প্রতিদিন অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন।
মানসিক অসুস্থতা বা একাকীত্ব
কেউ একা থাকলে তার মধ্যে নানা ধরনের চিন্তা বাসা বাঁধে। একাকীত্ব মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য এবং শারীরিক স্বাস্থ্য উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। মানসিক অসুস্থতা এবং একাকীত্ব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
অস্বাস্থ্যকর খাবার
সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবারের বিকল্প নেই। বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর খাবারে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান থাকে যা থেকে শরীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা লাভ করে। কিন্তু অস্বাস্থ্যকর খাবার শারীরিক সক্ষমতা কমিয়ে শরীরে রোগ সৃষ্টি করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার লক্ষণ
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হয়। অসুস্থতা সহজে নিরাময় হয় না। এই ক্ষেত্রে, বোঝা যায় যে ব্যক্তির শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার লক্ষণগুলো হলো-
* হাত ও পা সহজেই ঠান্ডা হয়ে যায়।
কিভাবে শ্বেত রক্তকণিকা কমে
1) সম্পূরক খাবার গ্রহণ।
2) নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ বা নিয়মিত ব্যায়াম।
3) বিষণ্নতা থেকে মুক্ত থাকা।
4) চাপ কমাতে.
5) নিয়মিত ডায়েট চার্ট পরিবর্তন।
আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং সুস্থ থাকতে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে করে আপনার শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে এবং শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও সব ধরনের ক্ষতিকর খাবার থেকে দূরে থাকুন।